বাংলাদেশে করোনা পরবর্তী সংকট মোকাবেলায় করনীয়

করোনা দুর্যোগ এক বিভীষিকা নাম। নানা সময়ে বিভিন্ন দুর্যোগ  নানারুপে ফিরে আসে মানবজীবনে। কেড়ে নিয়ে যায় অসংখ্য মানুষের জীবন,  নির্মম পদে দলে যায় মানুষের জীবনের তিল তিল করে জমানো সম্পদের ডালা। ঝড়,খরা,জলোচ্ছ্বাস,অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ভূমিকম্পের মত দুর্যোগ না এ দুর্যোগ অদৃশ্য ক্ষুদ্র করোনা ভাইরাস যার ছোবলে পুরো বিশ্ব আজ গৃহবন্দী। এটি সমাজের কাজকর্মের প্রচন্ডভাবে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।সারা বিশ্বের ২১০ টা দেশ ইতিমধ্যে করোনার কবলে আক্রান্ত।  বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় ৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে এরপর থেকে ৪৫ তম দিন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪১৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের৷ দেশের ৫৮ টি জেলা তে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।  করোনার তীব্রতা ক্রমশই ভয়ানক রুপ ধারণ করতেছে। বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের একটি দেশ যার সিংহভাগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হয় বৈদেশিক রেমিট্যান্স ও পোশাক খাতের উপর ভিত্তি করে।  দেড় মাস থেকে বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে যার ফলে দেশের মানুষের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে।  বাইরের দেশগুলোতে লকডাউন থাকার জন্য হঠাৎ করেই বাইরে থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে  পারছে না যার ফলে অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ বেড়েই চলেছে।  সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ তার কর্ম হারিয়েছে যার ফলে তারা দুর্বিষহ জীবন পার করতেছে। সরকার ও কিছু বৃত্তবান মানুষ  দৃশ্যত চেষ্টা করতেছে অনাহার, স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্যের সরবরাহ করার জন্য।  তবে প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে কতদিন? এমন অবস্থা যদি এখনই হয় তাহলে করোনা পরবর্তী সংকট কতটা ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করবে?  এবং এই সংকট মোকাবেলা করার পরিকল্পনা সরকারের এখনই করতে হবে।

করোনা পরবর্তী  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনঃ

১. সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রণোদনার প্যকেজটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভাবে বন্টন ব্যবস্থা করতে হবে। 
২. বাংলাদেশের সকল প্রকার দুর্যোগ প্রশমণে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রনয়ণ করে তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারলে করোনা দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হবে। 
৩. ত্রান বিতরণের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা জরুরি 
৪. স্থানীয় প্রশাসনের জোর তৎপরতার মাধ্যমে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও খাবার সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। 
৫. সরকার সমস্ত দ্বিধা -দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে দুর্যোগ মোকাবেলার কমিটি করা। 
৬. অতি দরিদ্র মানুষের ( VGD,VGF,Test Relief) আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৭. বিপর্যয় মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সরকারি এবং বেসরকারি এই উভয় ধরনের বিনিয়োগ বাড়ানো।
৮. করোনা পরবর্তী তে বেকারত্ব সমস্যা আরো তিব্র হবে এটি মোকাবেলার জন্য সরকার কে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। 
৯. বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,  বিভিন্ন দাতা সংস্থা কে এই  সংকট মোকাবিলা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। 
১০. সর্বোপরি দেশের সকল মানুষ কে সংকট কালীন সময়ে মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে। 







Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

Request for Meeting to Discuss PhD Opportunities

How to earn money from blog post ?